লেখক : আজমাইন তৌসিক ওয়াসি
‘পতাকা’ হচ্ছে বাংলা ভাষায় বিশ্বের সর্বপ্রথম কোড এডিটর। তবে এর ফাংশনালিটি ও ফিচারের দিক দিয়ে অনেকটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজও বলা যেতে পারে।
কী আছে পতাকাতে?
পতাকা-তে আছে সম্পূর্ণ বাংলা একটি কোড এডিটর, পতাকা গেম, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন ও কন্ট্রিবিউটরদের কথা।
প্রথমেই আসি, পতাকার যাত্রার শুরুতে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই প্রোগ্রামিং কী তা বুঝে না, ভয় পায়! এতো সিনট্যাক্স, কি-ওয়ার্ড- কোনটা কী কাজ করে, কোনটার পর কোনটা হয়, কেনো হয় – এসব বুঝতে পারে না। কোন কোড লিখলে কী হয়, কেনো এমন হয়, কেনো এমন হয়, কেন তেমন হয় না – এ জিনিসগুলো চিন্তা করতে পারে না। আর, ইংরেজিতে অনেকেই দক্ষ না, তার পরে আসে প্রোগ্রামিং শিখা!
কিন্তু, এখন কলেজ জীবনেই আছে সি প্রোগ্রামিং। আর ভার্সিটিতে প্রথম বর্ষে প্রায় সব জায়গাতেই শিখতে হয় প্রোগ্রামিং। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে, প্রোগ্রামিং শিখার কোনো বিকল্প নেই! এজন্যই, সবার কাছে বাংলায় কোডিং কে তুলে ধরতেই পতাকা-র জন্ম।
পতাকায় প্রতিটা লাইন, প্রতিটা সিনট্যাক্স, প্রতিটা জিনিস হবে বাংলায়। আর ভাষাটাও কোনো কঠিন বাক্য না, বরং আমরা যে প্রতিদিন যে ভাষায় কথা বলি – আড্ডা দেই, সেরকম সহজ ভাষায়ই হবে প্রোগ্রামিং। হ্যাঁ, তবে কিছু নিয়ম তো আছেই। কম্পিটুটার তো বোকা একটা যন্ত্র কেবল, তাইনা?
প্রোগ্রামিং হচ্ছে প্রধানত চিন্তা করা দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা। প্রোগ্রামিং কোনো নির্দিষ্ট কোডিং ভাষা শিখা না মোটেও! আর, পতাকা আমাদেরকে ঠিক এ জায়গাটিতেই সাহায্য করবে, বাংলায় প্রোগ্রামিং করতে দিয়ে, বাংলায় চিন্তা করতে দিয়ে! বাংলায় যেনো আমরা কোড লিখতে পারি, সিনট্যাক্স বুঝতে পারি, আমরা কোডে কোথাও কি দিলে কি আসে – এ জিনিসগুলো বুঝতে পারি – এগুলোতেই সাহায্য করবে পতাকা। আর এগুলো বুঝতে পারলে আমরা সহজেই যেকোনো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজই শিখতে পারবো। এখানে,আপাতত ইনপুট আউটপুট, নাম্বার রিলেটেড বেশ কিছু অপারেশন, বেশ কিছু লজিক্যাল অপারেশন করা যাবে এখন। আর, কোনো কিছু ডাউনলোড করা লাগবে না, কম্পিউটারও লাগবে না। ফোনের/কম্পিউটারের ব্রাউজারেই হবে কোডিং শেখা! তাও, বাংলায়!
তারপর আছে, পতাকা গেম। গেমে আমাদেরকে কোড লিখে লিখে গেম খেলতে হবে। ডানে, বামে, উপরে, নিচে নিতে হবে এখানে। কীভাবে কম্পিউটারকে কমান্ড দিয়ে কাজ করতে হয়, এসবই শিখবো আমরা এখানে! বিশেষ করে, ছোটদের জন্য এ গেমগুলো বেশ মজার ও শিক্ষণীয়। উন্নত বিশ্বে ছোটদের প্রোগ্রামিং এ হাতেখড়িটা এসব মজার গেম দিয়েই হয়!
পতাকা যারা একেবারে নতুন কোড শিখছে তাদের জন্য, অভিজ্ঞদের জন্য না। নতুনদের জন্য প্রোগ্রামিং শিখা কে আরো মজার করে তুলবে পতাকা!
তাহলে আর তর সইছে না? ব্রাউজারে গিয়ে লিখো > potaka.io
উদাহরণ
এসেই যখন পড়লাম, একটা কোড লিখেই দেখি!
মনে করি, আমার কাছে কিছু চকলেট আছে। আর, আমি সেগুলা আমার তিনজন বন্ধুর মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দিবো। তাহলে আমি জানতে চাই যে, সবাই কতটা করে চকলেট পাবে?
তাহলে ভাবি, আমার কাজটা কী? আমার কাছে চকলেটের নাম্বারটা আছে, আর আমি সেটাকে ৩ দিয়ে ভাগ করে, ভাগফলটা চাই। এই তো?
তাহলে এবার কোড লিখি!
প্রথমেই, ধরি, চকলেটের সংখ্যাটা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ধরলাম, আমার কাছে ১২টা চকলেট আছে! — লিখলাম
ধরি আমারকাছেচকলেট = ১২
এখন সবাই কতটা পাবে, তা জানতে হবে। তাই একে ৩ দিয়ে ভাগ করি — লিখলাম,
ধরি সবাইপাবে=আমারকাছেচকলেট/৩
এবার, কম্পিউটার যেনো আমাকে সেটা দেখায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে, চলো,
দেখাও(সবাইপাবে)
এবার রান দাও! কী দেখাচ্ছে? ৪টা? তাইনা? এবার তাহলে তুমি নিজের ইচ্ছামত সংখ্যা চেঞ্জ করে বসিয়ে দেখো ঠিক হয় কিনা!
বারবার এখানে কোড চেঞ্জ করতে বিরক্ত লাগছে? আচ্ছা, কম্পিউটারকে বলি যে, সে আমাকে জিজ্ঞেস করে যে, আমার কাছে কয়টা চকলেট আছে, তারপর যেনো যে নিজে নিজের ভাগ করে আমাকে জানিয়ে দেয়!
তাহলে কী করতে হবে? ইনপুট নিতে হবে! তাই প্রথম লাইনটা চেঞ্জ করে লিখলাম –
ধরি আমারকাছেচকলেট = ইনপুট(“তোমার কাছে কয়টা চকলেট আছে?”)
রান দাও! দেখো কি সুন্দর করে তোমাকে জিজ্ঞেস করছে যে কয়টা চকলেট আছে তোমার কাছে! তুমি একটা কিছু বসিয়ে এবার রান দাও! কী হলো, ঠিকঠাক জানিয়ে দিচ্ছে তো?
এবার নিজে দেখো কিছুক্ষণ, কী করলে কী হচ্ছে! আর, এভাবেই একজন প্রোগ্রামিং শিখে!
3 comments on “পতাকা কোড এডিটর”
Wow!!!! Amazing!
খুব আগ্রহ আছে ভাই প্রোগ্রামিং শিখার কিন্তু সামথ্য নেই কম্পিউটার কিনার
মোবাইল দিয়েই করা যায়