লেখিকা : নুসরাত জাহান
মোটামোটি ৩০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো নাসা শুক্র গ্রহ নিয়ে নানা পরিকল্পনা শুরু করেছে। নাসার ‘State of Nasa’ ব্রিফিংয়ে সংস্থাটি ঘোষণা করেছে তাদের পরবর্তী ডিসকভারি প্রোগ্রামের দুইটি মিশন হবে উত্তপ্ত এবং বিষাক্ত গ্রহ শুক্রকে ঘিরে। নাসা তার ডিসকভারি প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে দুটি নতুন মহাকাশযান পাঠাবে শুক্র গ্রহে। এদের মধ্যে একটি হলো DAVINCI+ এবং অপরটি VERITAS.
এই মিশন দুটির মূল উদ্দেশ্য হলো এটা বুঝা যে, কীভাবে পৃথিবীর সাথে অনেকাংশ মিল থাকা সত্ত্বেও গ্রহটি একটি নরকে পরিণত হয়েছে। শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠের অবস্থা কেন এতো খারাপ যে তার পৃষ্ঠে সীসা গলানোও সম্ভব! নাসার তত্ত্বাবধায়ক বিল নেলসন বলেছেন,
এই মিশন দুটি সমগ্র বিজ্ঞান সমাজকে এমন একটি গ্রহ অনুসন্ধান করার সুযোগ করে দেবে যা নিয়ে গত ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে মাথা ঘামানো হয়নি।
DAVINCI+ এই গ্রহটির বায়ুমন্ডল পর্যবেক্ষণ করবে। গ্রহটি কীভাবে গঠিত এবং কীভাবে বিবর্তন হলো তা নির্ধারণের পাশাপাশি গ্রহটিতে কখনো কোনো সমুদ্র ছিলো কি না তা নির্ধারণ করবে। অন্যদিকে VERITAS গ্রহটির ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস নির্ধারণের জন্য এর পৃষ্ঠের মানচিত্র তৈরী করবে যার সাহায্যে বুঝা যাবে যে, কেনো গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে এতোটা ভিন্নভাবে বিকশিত হয়েছে। গ্রহটিকে আবর্তন করাকালীন একটি সিন্থেটিক অ্যাপেরেচার রাডারের মাধ্যমে এর প্রায় সমগ্র পৃষ্ঠের উচ্চতার একটি নকশা তৈরী করবে যার সাহায্যে একটি নিখুঁত 3D মানচিত্র তৈরী করা যাবে। সেই সাথে প্লেট টেকটনিক্স এবং আগ্নিয়গিরির মতো প্রক্রিয়া গ্রহটিতে এখনো সক্রিয় আছে কিনা তা নির্ধারণ করবে। প্লেট টেকটনিক্স আধুনিক বিজ্ঞানের আধুনিকতম আবিষ্কার। পৃথিবীতে সংঘটিত ভূমিকম্পের জন্য দায়ী এই প্লেট টেকটনিক্স। বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বটিকে ব্যবহার করে ভূমিকম্প ছাড়াও আগ্নেয়গিরির উদগীরণ, পর্বত সৃষ্টি এবং মহাসাগর ও মহাদেশ সৃষ্টির ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন।