Skip to content

Tachyon

বাংলায় বিজ্ঞান গবেষণায় প্রথম উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম

এলিয়েন, UFO ও তারা কোথায়?

লেখক : কে. এম. শরীয়াত উল্লাহ

বুদ্ধিমান এলিয়েনরা যদি সত্যিই পৃথিবী ভ্রমণ করে থাকে তবে তা মানব জাতির ইতিহাসের জন্য খুবই গুরুত্ববহ একটি ঘটনা হবে।

সমীক্ষা থেকে দেখা যায়, প্রায় অর্ধেক আমেরিকান বিশ্বাস করেন যে অতীতে অথবা সাম্প্রতিক কোনো সময়ে এলিয়েনরা এই পৃথিবী ভ্রমণ করেছে। এবং এই বিশ্বাসীদের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে।

বিজ্ঞানীরা মানু্ষের এই সকল বিশ্বাসে পানি ঢেলে দেননা। বরং তারা খন্ডন করে বলেন, বুদ্ধিমান এলিয়েন অবশ্যই আছে তবে তারা যে পৃথিবী ভ্রমণ করেছে তার সম্ভাবনা নিতান্তই নগন্য। তাদের এই দাবীর উপর তাদেরকে প্রমাণ উত্থাপন করতেই হবে। যেমন জ্যোতিঃবিজ্ঞানী কার্ল সাগান বলেছেন,

“অসাধারণ দাবীর জন্য অসাধারণ প্রমাণ দরকার।”

Unidentified Flying Object

UFO বলতে Unidentified Flying Object বা অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু বুঝায়। এর কম বা এর বেশি না।
আমেরিকায় UFO দেখার এক লম্বা ইতিহাস আছে। Air Force Studies of UFO ১৯৪০ সাল থেকেই এর পিছনে লেগে আছে। ১৯৪৭ সালে নিউ মেক্সিকোতে একটি অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু দেখা যায়। এর কিছুদিন পড়েই একে একটি মিলিটারি বেলুন এর ক্রাশ ল্যান্ডিং বলে নিশ্চিত করা হয়। অধিকাংশ UFO আমেরিকার মানুষই দেখেছে। মজার ব্যপার হলো এশিয়া ও ইউরোপের জনসংখ্যা এতো বেশি হওয়া সত্ত্বেও তারা খুব কমই UFO কে চোখে দেখেছে।

অধিকাংশ UFO দেখতে পাওয়ারই একটি জাগতিক ব্যাখ্যা দাড় করানো সম্ভব। অর্ধেকের বেশি এইসকল ইউএফও দেখতে পাওয়ার কৃতিত্ত্ব যায় উল্কার ঝুড়িতে ও শুক্র গ্রহের কাছে। এইসকল ইউএফও আসলে বায়ুমন্ডল এ হটাৎ করে ঢুকে যাওয়া উল্কা। এইসকল বস্তু জ্যোতিঃবিজ্ঞানীদের কাছে সুপরিচিত হলেও সাধারণ লোকেরা এদেরসাথে সুপরিচিত নয়। ফলে তারা এদেরকে UFO এর সাথে গুলিয়ে ফেলে।

অধিকাংশ বিজ্ঞানীদের কাছে বুদ্ধিমান এলিয়েনদের দ্বারা পৃথিবী ভ্রমণের ঘটনাগুলো ও এই বিষয়ে গবেষণা করাও শুধুই সময় ও টাকার অপচয় বলে মনে করেন।

আমরা কি একা?

UFO এর মাধ্যমে এলিয়েনরা পৃথিবীতে আসে কিনা এই প্রশ্নের চেয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ও হট টপিক হলো আমরা এই মহাবিশ্বে একা কিনা? না কি আমাদের এই মহাবিশ্বে এছাড়াও কোনো সভ্যতা আছে?
বিজ্ঞানীরা এই পর্যন্ত প্রায় চার হাজার এক্সোপ্লানেট (যারা নির্দিষ্ট নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরে) আবিষ্কার করেছেন এবং এই সংখ্যা প্রতি দুই বছরে দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে কিছু এক্সোপ্লানেট পৃথিবীর ভরের প্রায় সমান ও তাদের নক্ষত্র থেকে পরিমান মত দূরত্ব আছে বলে তাদেরকে বসবাস উপযোগী গ্রহ বলে ধরা হচ্ছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে কাছের যে এক্সোপ্লানেট আছে তা মাত্র ২০ আলোকবর্ষ দূড়ে (আলো এক বছরে যে পরমান যায় তাকে ১ আলোকবর্ষ বলে)


জ্যোতিঃবিজ্ঞানীরা প্রায় নিশ্চিত যে আমাদের এই মহাবিশ্বে আমাদের ছাড়াও প্রাণ রয়েছে। আমাদের এই মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণীর সংখ্যা কত তা নির্ধারণ করতে জ্যোতিঃবিজ্ঞানীরা Drake Equation এর সাহায্য নেন। ড্রেক সমীকরণ এ বহু অনিশ্চয়তা মূলক পদ রয়েছে কিন্তু তবুও একে যদি সাম্প্রতিক সময়ে আবিষ্কার হওয়া এক্সোপ্লানেট এর সাথে মিলানো হয় তবে এই অনিশ্চয়তা অনেকাংশেই কমে যায়।

এই সম্ভাবনাই রসদ জোগাচ্ছে আমাদের এই মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণির খোঁজে যা এখন পর্যন্ত সফল হয়নি। তাই একজন বিজ্ঞানীরা আর বলেন না, “আমরা কি একা? ” বরং তারা বলেন, “তারা কোথায়?”

মূল লেখা : Dr. Chris Impey, University of Arizona

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।