নিঝুম রাতে প্রকৃতির মাঝে থাকলে সুনসান নীরবতা এবং রাতের আঁধারের অনুভুতি সকলকে গ্রাস করে নেয়। এসময় মনে হয় একটি ঝিঝি পোকার ডাকও কেমন যেন গম্ভীর! হয়ত অনেকদূরে কোন কুকুরের চিৎকারও যেন কানে কত স্পষ্ট! পেঁচার ডাকও শোনা যায় অনেকদূর থেকে! অথবা দূরে কোন একটা অনুষ্ঠানে সারাদিন ধরে গান বাজালেও তা হয়ত শোনা যায় না। কিন্তু রাতের বেলায় নীরব পরিবেশে এগুলো যেন হয় স্পষ্ট! এর কারণ কী?
আমরা জানি, আলো ঘন থেকে হালকা মাধ্যমে গমনের সময় যখন আপতন কোণ সংকট কোণের চেয়ে বড় হয়, তখন আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলন ঘটে অর্থাৎ, আলো আবার সেই মাধ্যমেই ফিরে আসে। আমরা জানি আলোর মতো শব্দও এক ধরনের তরঙ্গ। এর প্রতিফলন, প্রতিসরন হয়।
দিনের বেলায় সূর্যের তাপে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুস্তর উত্তপ্ত হয়ে হালকা মাধ্যমে পরিণত হয়। কিন্তু রাতের বেলায় তাপ বিকিরণের ফলে ভূপৃষ্ঠ ঠান্ডা হতে থাকে এবং ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থিত বায়ুস্তর উপরের স্তর গুলোর তুলনায় বেশি ঘন হয়। এর ফলে বায়ুস্তরের নিচের দিকে তুলনামূলক ঘন মাধ্যম এবং উপরের দিকে তুলনামূলক হালকা মাধ্যমের সৃষ্টি হয়। এবার পৃথিবী পৃষ্ঠে কোন শব্দ উৎস থেকে সৃষ্ট তরঙ্গ তো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। যে সমস্ত তরঙ্গ উর্ধ্বগামী তাদের সবগুলোই হালকা থেকে ঘন মাধ্যমের দিকে যাচ্ছে। তাই এক্ষেত্রে যত তরঙ্গ সংকট কোণের চেয়ে বেশি কোণে আপতিত হয়, তারা সবাই পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলনের মাধ্যমে পুনরায় ফিরে আসে। আর এ কারণেই রাতের বেলায় দূরের শব্দ উৎস থেকে সৃষ্ট শব্দও শোনা যায়। কিন্তু দিনের বেলায় বায়ুস্তরের পরিবর্তনের ফলে শব্দের অধিকাংশই প্রতিসরনের মাধ্যমে উর্ধ্বগামী হয়। তাই দিনের বেলায় দূরের শব্দ শোনা যায় না।
One comment on “রাতের বেলায় বহুদূরের শব্দও শোনা যায় কেন?”
সেরায়ায়ায়ায়ায়া