• QR Code কী?
আমরা সবাই কম বেশি QR Code দেখে থাকবো। না দেখলেও সমস্যা নেই। নিচে QR Code এর ছবি দেওয়া আছে। QR হলো কতোগুলো এনকোডেড তথ্যের সমাহার বা প্যাকেট। QR Code এর পূর্ণরুপ হলো (Quick Response Code)। এটি একমাত্রিক বার কোডের উন্নত এবং দ্বিমাত্রিক রুপ।
QR Code এ বিভিন্ন তথ্য অল্প যায়গার মধ্যে কম খরচে বা বিনা খরচে এনকোড করে রাখা যায়। আর কিউ আর কোডের মাধ্যমে অল্প সময়ে নির্দিষ্ট তথ্য খুজে পাওয়া যায় খুব সহজেই।
• মোর্স কোড থেকে কিউ আর কোড
মোর্স কোড কোন ভাষার বর্ণকে কোডে রুপান্তরের একধরনের পদ্ধতি যা দিয়ে এক ধরনের ছন্দের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ করা হয়। মোর্স কোড স্যামুয়েল মোর্স এর নামে নামকরণ করা হয়েছে। স্যামুয়েল মোর্স ১৮৪০ সালে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ যোগাযোগের জন্য প্রথম এ কোড তৈরি করেন।
মোর্স কোডের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানি নরম্যান জোসেফ এবং বার্নাড সিলভার বার কোড আবিষ্কার করেন। বার কোড আমরা সবাই কখনো না কখনো দেখেছি। চিপ্স কিংবা চকলেটের প্যাকেট বা খাতার পিছনের দিকে সারিবদ্ধ কালো লম্বা লম্বা দাগ গুলাই বারকোড। বারকোডের চেয়ে কিউ আর কোডের সুবিধা অনেক বেশি। বারকোড ব্যবহার করা হতো প্রোডাক্ট এর আইডেন্টিটি নাম্বার প্রকাশ করার জন্য। বার কোডে অল্প সংখ্যক নাম্বার ও হাতেগোনা কিছু ক্যারেকটর ইউজ করা যায় আর QR code এ ৪ হাজারের বেশি ইনকোড ক্যারেক্টার সাপোর্ট করে। ১৯৯৪ সালে জাপানের বিখ্যাত অটোমোবাইল কম্পানির অধিনস্ত কম্পানি (Denso wave) থেকে মাসাহিরো হারা (Masahiro Hara) QR Code আবিষ্কার করেন। তখন QR Code এ সংকেতাক্ষরে লেখা কোনো তথ্য নির্দিষ্ট করে চারটি নমুনার উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছিলো। সংখ্যা সূচক, বর্ণ সূচক, বাইনারি এবং কান্দজি (এক ধরনের জাপানি লিপিবিদ্যা)।
• QR Code-এর ব্যবহার
উল্লেখযোগ্যহারে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান QR কোড ব্যবহার করে থাকে । যেখানে তাদের পন্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য কিংবা ওয়েব সাইটের লিংক দেওয়া থাকে। এছাড়াও QR কোডের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। QR Code স্ক্যান করে ওয়াইফাই সেয়ারিং, বিজনেস কার্ড সেয়ারিং, ব্যক্তিগত বিভিন তথ্য আদানপ্রদান, বিভিন্ন ওয়েব সাইটের লিংক শেয়ার, পেমেন্ট সিস্টেমসহ আরো অনেক কিছু করা যায়। তারপর ক্লায়েন্ট খুব সহজেই সেই কোড স্কেন করে অটোমেটিকালিব নির্ধারিত সাইটে প্রবেশ করতে পারবে বা এনকোডেড টেক্সট বা ইরনফরমেশন দেখতে পারবে।
• QR Code-এর প্রকারভেদ
QR Code দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা:
১. স্ট্যাটিক কিউ আর কোড।
২. ডায়নামিক কিউ আর কোড।
স্ট্যাটিক কিউ আর কোড পরিবর্তন করা যায় না। এখানে নির্দিষ্ট তথ্য এনকোড করা থাকে যা পরবর্তিতে পরিবর্তন করা যায় না।
ডায়নামিক কিউ আর কোডের ভিতরের তথ্য যখন খুশি পরিবর্তন করা যায়। যেমন ধরুন আপনি আপনার একটি বিজনেস কিউ আর কোডে একটি নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট এর দাম লিখেছেন ১৩০০০ টাকা। পরবর্তিতে প্রোডাক্ট এর দাম বাড়াতে চাইলে খুব সহজেই সেই টেক্সট চেঞ্জ করে দিতে পারবেন। ডায়নামিক কিউ আর এর সকল তথ্য একটি সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে যেখান থেকে এডমিন যখন খুশি টেক্সট চেঞ্জ করার সুবিধা পাবেন। তারপর ক্লায়েন্ট পুর্বের কিউ আর কোড স্ক্যান করলেও পরিবর্তিত তথ্য দেখতে পারবে। ডাইনামিক কিউ আর কোড স্ক্যান করার জন্য অবশ্যই ইন্টারনেট কানেকশান থাকতে হবে।
• QR Code তৈরি
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে কিউ আর কোড তৈরি করা খুবই সহজ। গুগল করলেই শত শত ওয়েবসাইট পাওয়া যাবে কিউ আর কোড তৈরি করার। সেখান থেকে খুব সহজেই আপনি যেকোনো ধরনের কিউ আর কোড তৈরি করে নিতে পারবেন। নিচে কিছু ওয়েবসাইট এর লিংক দেওয়া হলো।
১. The_QR_Code_Generator ( এই ওয়েবসাইট থেকে আপনি দু ধরনের QR Code ই তৈরী করতে পারবেন).
২. https://www.qr-code-generator.com/
৩. https://www.tec-it.com/en/download/free-software/qrcode-studio/Download.aspx ( ম্যাক এবং উইন্ডোজ ভার্সন। অফলাইনে কিউ আর বানানোর সফটওয়্যার)
৪. https://play.google.com/store/apps/details?id=com.blogspot.aeioulabs.barcode
(স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য)। এই অ্যাপটি ব্যবহার করে খুব সহজেই অফলাইনে আপনি স্ট্যাটিক কিউ আর কোড, বারকোডসহ বিভিন্ন কোড তৈরী করতে পারবেন।এটি ব্যবহার করে আমার তৈরী করা একটি কিউ আর কোডের নমুনা নিচে দেওয়া রইলো। স্ক্যান করে দেখতে পারেন।
3 comments on “কিউআর কোডের চৌদ্দগুষ্টি”
চমৎকার লেখা
Guchano lekha! valo laglo
Very very informative…Learnt many things…