Skip to content

Tachyon

বাংলায় বিজ্ঞান গবেষণায় প্রথম উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম

সিমবায়োসিস আবার কী?

লেখক : কে. এম. শরীয়াত উল্লাহ

সহাবস্থান বা সিমবায়োসিস হলো দুটি ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ চলমান একটি শারিরীক সম্পর্ক। এ সম্পর্কে এক প্রজাতি বা উভয় প্রজাতি একে অপর থেকে লাভবান হতে পারে। সিমবায়োসিসকে তিনটি প্রধান ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়।

প্যারাসাইটিজম (Parasitism)

এ সহাবস্থানে একটি প্রজাতি অন্য প্রজাতির দেহে বা দেহাভ্যন্তরে অবস্থান করে নানা প্রকার সুবিধা লাভ করে। এক্ষেত্রে যে প্রজাতি সুযোগ সুবিধা লাভ করে তাকে প্যারাসাইট বলে। প্যারাসাইট যে প্রজাতির দেহে অবস্থান করে সুযোগ সুবিধা লাভ করে তাকে হোস্ট বলে। এক্ষেত্রে প্যারাসাইট নানা সুযোগ সুবিধা লাভ করলেও হোস্টের ক্ষতি হয়। কখনো কখনো প্যারাসাইট কর্তৃক অত্যাধিক ক্ষতির কারণে হোস্ট মারা যায়। হোস্টের মৃত্যুর পর প্যারাসাইট নতুন হোস্টের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। যদি নতুন হোস্ট না পায়, তবে প্যারাসাইট মারা যায়। উদাহরণস্বরূপ : কৃমি ও মানবদেহের সহাবস্থান প্যারাসাইটিজম। এক্ষেত্রে কৃমি প্যারাসাইট ও মানবদেহ হোস্ট। কৃমি মানবদেহ থেকে শক্তি শোষণ করে নিজে উপকৃত হলেও মানবদেহের ক্ষতি সাধন করে।

কমেনসেলিজম (Commensalism)

এ সহাবস্থানে একটি প্রজাতি অন্য প্রজাতির দেহে অবস্থান করে নানা প্রকার সুযোগ সুবিধা লাভ করলেও হোস্টের কোনো প্রকার ক্ষতি সাধন হয় না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় সামুদ্রিক শার্ক ও রেমুরার মধ্যে বিদ্যমান সহাবস্থানের কথা। কিছু প্রজাতির শার্কের সাথে Remura নামক ক্ষুদ্র একপ্রকারের মাছ অবস্থান করে। রেমুরার মাথার নিচের দিকে একটি অংশ থাকে যার নাম sucker। এর সাহায্যে রেমুরা শার্কের দেহের সাথে নিজেকে আটকে রাখে। ফলে শার্কের সাথে রেমুরা দ্রুত চলাচল করতে পারে ও শার্কের খাবার খাওয়ার পর কিছু অবশিষ্ট অংশ রেমুরা ভক্ষণ করে। এক্ষেত্রে যেহেতু শার্কের কোনো উপকার বা অপকার হয় না, তবে রেমুরার উপকার হয় তাই এ সহাবস্থানকে কমেনসেলিজম বলা হয়।

মিউচুয়ালিজম (Mutualism)

এ সহাবস্থানে উভয় প্রজাতিই একে অপর কর্তৃক উপকার লাভ করে ও কারোরই ক্ষতি হয় না। বরং এমন কিছু সহাবস্থান রয়েছে যারা আসলে একটি প্রজাতি হিসেবে কল্পনাই করা যায় না। উদাহরণ হিসেবে লাইকেনের কথাই আনা যাক। শৈবাল ও ছত্রাক নামের দুইটি ভিন্ন প্রজাতি একে অপরের সাথে সহাবস্থানে থাকে। এ সহাবস্থানে থাকাকালে শৈবাল ছত্রাক উভয়ে একে উপরের উপকার করে তবে কোনো প্রকার অপকার করে না। তাই লাইকেনের এ সহাবস্থানকে মিউচুয়ালিজম বলা হয়।

[সূত্র: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি ও ইন্টারনেট]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।