লেখিকা : আবিরা আফরোজ মুনা
দ্বিতীয় মস্তিষ্ক লেখাটা দেখে একটু অবাক হচ্ছেন হয়তো! 2nd Brain বা দ্বিতীয় মস্তিষ্ক বলতে আবার কিছু হয় নাকি? ওটা কি আমাদের মস্তিষ্কের মতো?
আমাদের Enteric Nervous System বা পরিপাকতন্ত্রকে বলা হয় 2nd Brain বা দ্বিতীয় মস্তিষ্ক। শুনে আরেকটু অবাক হবার কিছু নেই। কেন বলা হয় সেটা জানি চলুন:-
আমাদের পরিপাকতন্ত্রের কাজ শুধুমাত্র খাবার শোষণ করা নয়, বরং এর-চাইতেও আরও বেশি কিছু। পরিপাকনালীতে প্রচুর পরিমানে স্নায়ু, প্লেক্সাস আছে। মস্তিষ্কের বাইরে এত স্নায়ু আর কোথাও নেই!
ডাঃ রসি’র মতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার পেছনে অন্ত্রের স্বাস্থ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের রোগ প্রতিরোধক কোষের ৭০% অন্ত্রের ভিতরেই থাকে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেল যে গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টাইনাল বা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যাগুলো, সর্দি, কাশি, জ্বরের মতো সাধারণ রোগ হওয়ার আশঙ্কা আরো বাড়িয়ে দেয়।
অন্ত্রের সঙ্গে আমাদের মেজাজ মর্জিও সংযুক্ত। আমাদের পরিপাকতন্ত্রে শরীরের প্রায় অর্ধেক ডোপামিন (এটি একটি হরমোন এবং ক্যাটেকোলামাইন ও ফেনাথ্যালামিন পরিবারের একটি নিউরো ট্রান্সমিটার যা মানব মস্তিষ্ক ও শরীরের বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজে দরকার হয়), আনুমানিক ৮০% থেকে ৯০% সেরোটোনিন উৎপন্ন হয়। সেরোটোনিন এমন এক ধরণের রাসায়নিক বার্তাবাহক যার সঙ্গে আমাদের পরিপাক ক্রিয়া থেকে শুরু করে মানসিক রোগ সংক্রান্ত শরীরের নানা কার্যক্রম জড়িত। এক কথায় সেরোটোনিনের নিঃসরণের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে আমাদের মেজাজ ভালো থাকবে, না খারাপ।
এমন অনেক কাজ আছে যেগুলোর উদ্দীপনা মস্তিষ্কে যাবার প্রয়োজন পড়ে না। সেই কাজগুলোকে এরা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এতে কাজ চালাতে দেহে বাঁধা সৃষ্টি হয় না।
প্রচুর পরিমাণ নিউরন, বিভিন্ন কাজ নিজেরাই ম্যানেজ করতে পারার সক্ষমতাসহ ইত্যাদি গুরত্বপূর্ণ কাজের জন্য Enteric Nervous System কে তাই দ্বিতীয় মস্তিষ্ক বলা হয়। পরিপাকতন্ত্রের যত্নে আমাদের বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন!