লেখক : কে. এম. শরীয়াত উল্লাহ
ইরেজার কীভাবে কাজ করে তা জানার আগে আমাদের জেনে আসতে হবে পেন্সিল দিয়ে কীভাবে লেখা হয়। আমরা যে পেন্সিল ব্যবহার করি তার মাঝে যে দণ্ড থাকে তা হচ্ছে গ্রাফাইট নামক একটি পদার্থের দণ্ড। এই গ্রাফাইট দণ্ড আসলে গ্রাফিন নামক একটি পদার্থের অনেকগুলো শিট একটার উপর আরেকটা বসে যে সিলিন্ডার আকৃতি তৈরি করে তা। আমরা যখন পেন্সিল দিয়ে কাগজে ঘষা দেই, তখন কাগজের ও গ্রাফিনের মধ্যে ঘর্ষণের ফলে গ্রাফিন শিট এক এক করে খুলে কাগজের পৃষ্ঠে লেগে যায়। গ্রাফাইন শিটগুলোর মধ্যে খুবই দূর্বল আকর্ষণ বল, ভ্যান ডার ওয়ালস বল কাজ করে। ফলে হালকা বল প্রয়োগের ফলেই গ্রাফিন শিটগুলো একে অপর থেকে আলাদা হয়ে যায় ও কাগজের গায়ে লেগে যায়।
লেখা কীভাবে লেখা হয় সেটাতো বুঝলাম, এবার দেখা যাক লেখা কীভাবে মুছা হয় তা।
ইরেজার আসলে একধরণের রাবার। রাবারের পৃষ্ঠের সাথে যখন কাগজের পৃষ্ঠে আলতো ভাবে লেগে থাকা গ্রাফিন শিটের ঘর্ষণ হয় তখন গ্রাফিন শিটগুলো ঘর্ষণের ফলে রাবারের মাথায় লেগে যায় ও উঠে চলে আসে। এভাবে কাগজে থাকা গ্রাফিন শিট রাবারে চলে আসে আর আমরা মনে করি লেখা বোধহয় গায়েব হয়ে গেছে। আসলে সেই লেখাটা এখন রাবারে চলে এসেছে। এজন্যই রাবার দিয়ে মোছার পর যে হালকা অংশ ক্ষয় হয়ে যায় তা কিন্তু একটু কালো দেখায়।
Edward Nairne, 1770 সালে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে ইরেজার উৎপাদন শুরু করেন। এর পূর্বে পেন্সিলের লেখা মুছতে ভেজা পাউরুটি ব্যবহার করা হতো। এডওয়ার্ড ভুলক্রমে একটি বিজ্ঞান মেলায় পাউরুটির বদলে রাবার ব্যবহার করেন ও দেখতে পান এটি পাউরুটির তুলনায় অধিক কার্যকরী। আজকাল আমরা পেন্সিলের মাথায় যে ছোট ইরেজার দেখতে পাই, সেগুলোকে প্লাগ বলা হয়। বর্তমানে তৈরি করা অধিকাংশ রাবারই ভিনাইলের তৈরি। ভিনাইলের স্থিতিস্থাপকতা ও দীর্ঘস্থায়িত্বের ফলে একে ব্যবহার করা হয়।
2 comments on “ইরেজার দিয়ে কীভাবে লেখা মুছে?”
ভালো ছিলো লেখনী। অনেক নতুন কিছু জানতে পারলাম ।
ধন্যবাদ