WhatsApp Messenger
WhatsApp Messenger সংক্ষেপে WhatsApp হলো একটি জনপ্রিয় মেসেজিং পরিষেবা যেটি কিনা মেসেজিং, ছবি, ভিডিও বা অডিও বার্তা আদান প্রদানসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার ব্যবহার করা যায়। ২০০৯ সালে ইয়াহুর সাবেক কর্মী জ্যান কউম এবং ব্রায়ন এক্টন হোয়াটসঅ্যাপ তৈরী করেন। ২০১৪ সালে ফেসবুকের কাছে এই ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়ে যায়। বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ বিলিয়নের বেশি।
Facebook Messenger
Facebook Messenger সংক্ষেপে Messenger হলো ফেসবুক কর্তৃক ডেভেলপকৃত একটি আমেরিকান মেসেজিং অ্যাপ। এটি ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ২০১১ সালে স্বতন্ত্রভাবে আইওএস এবং এন্ড্রোয়েডের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এটিও হোয়াটসঅ্যাপ এর মতো একটি মেসেজিং অ্যাপ যেটিতে ছবি,অডিও, ভিডিও শেয়ারিং, কলিংসহ নানা সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে এটি একটি বহুল ব্যবহৃত অ্যাপ।
- সাধারনত হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক ভাইবোনের মতো। কারণ এদের ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য একি। তবে বিশেষ কিছু ভিন্নতা আছে এদের মধ্যে।
- হোয়াটসঅ্যাপ লগইন করার জন্য কোনো ইউজারনেম বা পাসওয়ার্ড লাগে না। ফেসবুকও লগইন করতে হয় না।তবে ফোনে একটি সিমকার্ড থাকতে হবে।
- মেসেঞ্জার লগইন করার জন্য ফেসবুক ইনফরমেশনের দরকার হয়। তবে কোনো সিমকার্ড লাগে না
- হোয়াটসঅ্যাপে ৩০টির বেশি ফটো বা ভিডিও একিসাথে সেন্ড করা যায় না। মেসেঞ্জারে এরকম কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
- হোয়াটসঅ্যাপে এক ফ্রেন্ডের কন্টাক্ট অন্য ফ্রেন্ডকে সেয়ার করার সুযোগ রয়েছে। মেসেঞ্জারে এই ফিচারটি নেই।
- হোয়াটসঅ্যাপে নিজস্ব স্টেটাস শেয়ার করা যায়। মেসেঞ্জারের এমন কোনো ফিচার নেই।
- অনেক স্লো ইন্টারনেট স্পিড এমনকি 2G নেটাওয়ার্কেও হোয়াটসঅ্যাপে কলিং এর সুবিধা রয়েছে। মেসেঞ্জারে 2G নেটাওয়ার্কে মেসেজও সেন্ড হয় না।
- হোয়াটসঅ্যাপে আছে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন যা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত মেসেজ শুধুমাত্র দাতা এবং গ্রহীতার মাঝেই সীমাবদ্ধ ও সুরক্ষিত রাখে। অন্যদিকে মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীদের মেসেজ কতিপয় সার্ভারে ডিফল্ট আকারে জমা থাকে। যা চাইলেই কতৃপক্ষের দেখার সুযোগ রয়েছে।
হোয়াটসঅ্যাপ সম্পর্কিত গুজব
হোয়াটসঅ্যাপ যেহেতু বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় তাই অনেকে মনে করেন ডেটাবেজ ব্যবস্থাপনা থেকেও আয় করতে পারে হোয়াটসঅ্যাপ। কিছুদিন আগে একটি গুজব ছড়িয়েছিলো। বলা হচ্ছিলো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফেসবুকের কাছে বিক্রি করছে।যার ফলে গ্রাহকদের প্রাইভেসি নষ্ট হচ্ছে তাই হোয়াটসঅ্যাপ বয়কট করা উচিত। মজার ব্যপার হলো, ফেসবুক অনেক আগেই হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নিয়েছে।তাই গ্রাহকদের ব্যাক্তিগত তথ্য কেনার কোনো প্রয়োজন নেই ফেসবুকের। ফেসবুক চাইলেই সেসব তথ্য ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু গ্রাহকদের তথ্য বিক্রি বা গ্রাহকদের তথ্য বিশ্লেষণ করে অন্য প্রতিষ্ঠানকে কোনো সেবা তৈরি করতে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। কেননা হোয়াটসঅ্যাপে রয়েছে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন।
End-to-End Encryption কী?
এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন হলো ক্রিপ্টগ্রাফি পদ্ধতির একটি ধরন। ক্রিপ্টগ্রাফি হলো এমন একটি পদ্ধতি যা দ্বারা একটি তথ্যকে গোপন কোডে রুপান্তর করা যায় যাতে নির্দিষ্ট ব্যক্তি শুধুমাত্র এই তথ্যের মানে বুঝতে পারে এবং তথ্যটির প্রকৃত অর্থ লুকানো থাকে। তথ্য এনক্রিপ্ট এবং ডিপক্রিট করার পুরো কৌশলটিকে একসাথে ক্রিপ্টগ্রাফি বলা হয়। ক্রিপ্টগ্রাফি নিয়ে ট্যাকিয়ন ম্যাগাজিন সংখ্যা-১ এ একটি সিরিজ শুরু হয়েছে। আপনারা চাইলে ওখান থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। End-to-end encryption(E2EE) হলো এনক্রিপশন পদ্ধতির একটি ধরন যেটির মাধ্যমে ইনক্রিপ্ট করা ডেটা দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ইন্টারনেট প্রভাইডার বা সার্ভার সেই তথ্য দেখতে পারবে না। WhatsApp-এর কোনও ক্ষমতা নেই আপনার এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড মেসেজের কন্টেন্ট দেখার বা কল শোনার। কারণ WhatsApp-এ পাঠানো এবং গ্রহণ করা মেসেজের এনক্রিপশন ও ডিক্রিপশন সম্পূর্ণভাবে আপনার ডিভাইসে হয়ে থাকে। আপনার ডিভাইস থেকে কোনও মেসেজ পাঠানোর আগেই এটি ক্রিপটোগ্রাফিক ‘লক’ দিয়ে নিরাপদ থাকে এবং শুধুমাত্র প্রাপকের কাছে সেটি খোলার ‘কী’ থাকে। এছাড়াও, প্রত্যেকটি একক মেসেজ পাঠানোর সাথে সাথে এই কীগুলিও পরিবর্তিত হয়।
তবে সার্ভারের মাধ্যমেই এসব গুপ্ত কোড আদান প্রদান করা হয়। যেগুলোর অর্থ সার্ভার সরাসরি বুঝতে না পারলেও অর্থ বুঝার জন্য খুব সাধারন একটি পাইথন স্ক্রিপ্ট এবং কিছু টেকনিক কাজে লাগানো যায়। তবে এটি সময় সাপেক্ষ ব্যপার। কেনোনা প্রত্যেকটি একক মেসেজ পাঠানোর সময় এই কী গুলি পরিবর্তিত হয়।